ইনকিলাব মঞ্চের নেতা ওসমান হাদির মৃত্যুর পর থেকেই উত্তাল বাংলাদেশ। দেশজুড়ে হিংসা ও অশান্তির আবহে নির্ধারিত সময়ে জাতীয় নির্বাচন আদৌ হবে কি না, তা নিয়ে জল্পনা শুরু হয়েছিল। তবে এই সমস্ত প্রশ্নে ইতি টানলেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান মহম্মদ ইউনূস। তাঁর স্পষ্ট বক্তব্য—নির্বাচন পিছোচ্ছে না, নির্ধারিত দিনেই ভোট হবে।
সোমবার রাতে দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়া বিষয়ক মার্কিন দূত সার্জিও গোরের সঙ্গে ফোনে কথা বলেন ইউনূস। সেই আলোচনায় তিনি আশ্বাস দেন, আগেই ঘোষিত সময়সূচি অনুযায়ী আগামী ১২ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
বাংলাদেশ সরকারের তরফে জানানো হয়েছে, প্রায় আধঘণ্টার এই ফোনালাপে বাণিজ্যিক বিষয়ের পাশাপাশি দেশের বর্তমান পরিস্থিতি ও নির্বাচন নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়। সার্জিও গোরে আসন্ন ভোট নিয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের পরিকল্পনা জানতে চাইলে ইউনূস বলেন, দেশের মানুষ তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগের জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছে এবং সরকার অবাধ ও সুষ্ঠ নির্বাচন করাতে সম্পূর্ণ প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
একই সঙ্গে নাম না করেই ইউনূস অভিযোগ করেন, ক্ষমতাচ্যুত রাজনৈতিক দলের সমর্থকরা দেশে অশান্তি ছড়িয়ে নির্বাচনী প্রক্রিয়া ব্যাহত করার চেষ্টা করছে। তাঁর দাবি, লক্ষ লক্ষ ডলার খরচ করে পরিস্থিতি অস্থিতিশীল করা হচ্ছে এবং পলাতক নেতারা বাইরে থেকে উস্কানি দিচ্ছেন। তবে তিনি স্পষ্ট করেন, সমস্ত ধরনের পরিস্থিতি মোকাবিলায় সরকার প্রস্তুত।
ইউনূস আরও জানান, “নির্বাচনের এখনও প্রায় ৫০ দিন বাকি। আমরা একটি শান্তিপূর্ণ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন চাই। সেই লক্ষ্যেই সব ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে।”
অন্যদিকে, মার্কিন দূত সার্জিও গোরে ইউনূসকে জানান, বাংলাদেশের সামগ্রিক পরিস্থিতির উপর তারা নজর রাখছেন। আলোচনায় ওসমান হাদির মৃত্যু ও তাঁর শেষকৃত্য ঘিরে সৃষ্ট উত্তেজনার বিষয়টিও উঠে আসে।
উল্লেখ্য, ওসমান হাদির মৃত্যুর পর ঢাকাসহ বিভিন্ন শহরে একাধিক বিক্ষোভ ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে হামলার অভিযোগও সামনে এসেছে। দেশবাসীকে শান্তি বজায় রাখার আহ্বান জানিয়েছেন ইউনূস, তবে তার পরেও সোমবার বিভিন্ন এলাকায় দফায় দফায় উত্তেজনা ছড়াতে দেখা যায়।
সব মিলিয়ে, অশান্তির আবহেও নির্বাচন নিয়ে অনড় অবস্থানেই রয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার—এই বার্তাই স্পষ্ট করে দিলেন মহম্মদ ইউনূস।
- Log in to post comments