বাংলাদেশ অশান্তির আঁচ, অনুষ্ঠান বাতিল করলেন এই শিল্পী

বাংলাদেশ অশান্তির আঁচ, অনুষ্ঠান বাতিল করলেন এই শিল্পী

সাম্প্রতিক সময়ে ফের অশান্ত

গায়িকা পৌষালী বন্দ্যোপাধ্যায়

হয়ে উঠেছে বাংলাদেশ। ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক ওসমান হাদির মৃত্যুর খবর প্রকাশ্যে আসার পর থেকেই পরিস্থিতি দ্রুত উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। বৃহস্পতিবার রাত থেকে দেশের বিভিন্ন জায়গায় হিংসা ও ভাঙচুরের ঘটনা সামনে এসেছে। হামলা চালানো হয়েছে একাধিক সংবাদমাধ্যমের অফিসেও।

এই অশান্তির মধ্যেই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বাংলাদেশের অন্যতম ঐতিহ্যবাহী সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান ‘ছায়ানট’। রাতভর ভাঙচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগের খবর পাওয়া গেছে। মাটিতে ছুড়ে ফেলা হয় তবলা, হারমোনিয়ামসহ একাধিক বাদ্যযন্ত্র। বহু দশকের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের উপর এই হামলা দুই বাংলার শিল্পীমহলে গভীর শোক ও ক্ষোভের সৃষ্টি করেছে।

এই ঘটনায় ইতিমধ্যেই বহু প্রবীণ শিল্পী প্রকাশ্যে নিন্দা জানিয়েছেন। এবার মুখ খুললেন নতুন প্রজন্মের গায়িকা পৌষালী বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি জানান, এই খবর শোনার পর তিনি মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছেন।

পৌষালীর কথায়, “কিছু ঘটনা থাকে যেগুলোর কোনও ভাষা হয় না। ছায়ানট ভাঙচুর তেমনই একটি ঘটনা। বাংলাদেশের সংস্কৃতি থেকে আমরা বহু কিছু শিখেছি নিজের ভাষা ও সংস্কৃতির প্রতি যে দায়বদ্ধতা ছিল, সেটাই ছিল শিক্ষণীয়। আজ সেই জায়গাটাই ধ্বংস হয়ে যেতে দেখছি।”

তিনি আরও বলেন, এই ঘটনা শুধু লজ্জাজনক নয়, একজন শিল্পীর কাছে ভয়ংকর কষ্টেরও।

“একটা দেশ চোখের সামনে জ্বলছে, ভেঙে পড়ছে এটা কোনও শিল্পীর পক্ষে সহ্য করা সম্ভব নয়।”

জানা গিয়েছে, এই ঘটনার আগেই বাংলাদেশে পৌষালীর একাধিক অনুষ্ঠানের পরিকল্পনা ছিল। উত্তরা ক্লাব ও মানিকগঞ্জে তাঁর ও তাঁর ব্যান্ডের শো হওয়ার কথা ছিল। আয়োজকদের সঙ্গে যোগাযোগও হয়েছিল।

তবে পরিস্থিতি দ্রুত অবনতি হওয়ায় নিরাপত্তার কথা ভেবেই বাংলাদেশ সফর বাতিল করার সিদ্ধান্ত নেন তিনি।

পৌষালীর কথায়, “বাংলাদেশে আমরা বহুবার গান গেয়েছি। এপার বাংলার প্রায় সব শিল্পীরই সেখানে কাজের অভিজ্ঞতা রয়েছে। শিল্পীমহলে মজা করে বলা হয় বাংলাদেশে গান না গাইলে গান শেখাই সম্পূর্ণ হয় না। সেই জায়গাটা আজ ভেঙে যেতে দেখছি।”

এই ঘটনায় আরও বেশি ভেঙে পড়েছেন পৌষালী, কারণ তাঁর পরিবারের একাংশ এখনও বাংলাদেশে থাকেন। ফরিদপুরের ঝিলতুলি এলাকায় তাঁদের পূর্বপুরুষের ভিটে রয়েছে বলে জানান তিনি।

“ওখানকার অস্তিত্বও প্রায় শেষ। আমার মনে হয়, আর কোনওদিনই হয়তো সেখানে যাওয়া হবে না।”

খবর পাওয়ার পর তাঁর প্রতিক্রিয়া ছিল নীরব কান্না।

“ছায়ানট ভাঙার কথা শুনে আমি শুধু ঘরে বসে কেঁদেছি। আমার এমন কোনও ক্ষমতা নেই যে গিয়ে অনুরোধ করতে পারব ভেঙো না। ঈশ্বর যদি সেই ক্ষমতা দিতেন, সেটাই করতাম।”

উল্লেখ্য, এই বিষয়ে ইমন চক্রবর্তীর সঙ্গেও যোগাযোগ করা হয়েছিল, তবে তিনি এই মুহূর্তে কোনও মন্তব্য করতে চাননি।

Category