মমতার মন্দির রাজনীতি নিয়ে খোঁচা শাহের-মসজিদ প্রসঙ্গেও স্পষ্ট বার্তা কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর

মমতার মন্দির রাজনীতি নিয়ে খোঁচা শাহের-মসজিদ প্রসঙ্গেও স্পষ্ট বার্তা কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর

তিনদিনের সফরে সোমবার রাতেই কলকাতায় পৌঁছেছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। আগামী বছরের বিধানসভা নির্বাচনকে সামনে রেখে রাজ্যে বিজেপির সাংগঠনিক পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতেই তাঁর এই সফর। মঙ্গলবার সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে রাজ্যের রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে একাধিক বিষয়ে নিজের অবস্থান স্পষ্ট করেন তিনি। এর মধ্যে অন্যতম ছিল বাংলার মন্দির-মসজিদ ঘিরে রাজনীতি।

ভোট যত কাছে আসছে, ততই বাংলায় ধর্মীয় পরিকাঠামোকে কেন্দ্র করে রাজনৈতিক আলোচনা জোরদার হচ্ছে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সম্প্রতি দিঘায় জগন্নাথ মন্দির নির্মাণ করেছেন। নিউটাউনে দুর্গা অঙ্গনের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন হয়েছে, আবার জানুয়ারিতে উত্তরবঙ্গে মহাকাল মন্দিরের শিলান্যাসের ঘোষণাও রয়েছে। অন্যদিকে মুর্শিদাবাদে বাবরি মসজিদ নির্মাণের ঘোষণা ঘিরে রাজনৈতিক বিতর্কও তৈরি হয়েছে।

এই প্রেক্ষিতেই সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে অমিত শাহ বলেন, বাংলায় মন্দির-মসজিদের রাজনীতি করছে মূলত তৃণমূল কংগ্রেস এবং তৃণমূল থেকে বেরিয়ে যাওয়া এক নেতা। তাঁর মতে, নির্বাচনের সময় এই ধরনের রাজনীতি রাজ্যের ও দেশের শান্তির পক্ষে ক্ষতিকর হতে পারে এবং বিষয়টি বাংলার মানুষকেই বুঝতে হবে।

মুখ্যমন্ত্রীর মন্দির নির্মাণ প্রসঙ্গে শাহ বলেন, মন্দির তৈরিকে তিনি স্বাগত জানান, তবে তাঁর মন্তব্য এই উদ্যোগ অনেক দেরিতে নেওয়া হয়েছে।

এদিন অনুপ্রবেশ ইস্যুতেও রাজ্য সরকারকে তীব্র আক্রমণ করেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। তিনি বলেন, বাংলার সীমান্ত দিয়ে যে অনুপ্রবেশ হচ্ছে, তা শুধু রাজ্যের সমস্যা নয়, বরং গোটা দেশের নিরাপত্তার সঙ্গে যুক্ত। তাঁর দাবি, এমন একটি শক্ত সরকার প্রয়োজন, যারা অনুপ্রবেশ পুরোপুরি বন্ধ করতে পারবে। একই সঙ্গে তিনি অভিযোগ করেন, রাজ্যে তোষণের রাজনীতি চলছে।

অমিত শাহ আরও বলেন, এক সময় উন্নয়নের সূচনা এই বাংলা থেকেই হত, কিন্তু এখন তোলাবাজির পরিবেশে শিল্পপতিরা মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন। চিটফান্ড, নিয়োগ, রেশন, আবাস ও একশো দিনের কাজ একাধিক দুর্নীতির অভিযোগ তুলে তিনি মমতা সরকারকে নিশানা করেন। শিল্পের অভাব প্রসঙ্গে তাঁর কটাক্ষ, বাংলায় এখন উপার্জনের অধিকার কার্যত এক পরিবারের মধ্যেই সীমাবদ্ধ।

সীমান্তে ফেন্সিংয়ের জন্য জমি না পাওয়ার অভিযোগও তোলেন শাহ। তিনি জানান, এ বিষয়ে একাধিকবার রাজ্য সরকারকে চিঠি দেওয়া হয়েছে এবং কেন্দ্রীয় স্তরে বৈঠকও হয়েছে, তবুও প্রয়োজনীয় সহযোগিতা মিলছে না।

সব মিলিয়ে, বিধানসভা ভোটের আগে ধর্মীয় রাজনীতি, অনুপ্রবেশ ও দুর্নীতি এই তিন ইস্যুকেই সামনে রেখে রাজ্য সরকারকে আক্রমণে নামলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, যা আগামী দিনে বাংলার রাজনীতিতে উত্তাপ আরও বাড়াবে বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক মহল।

Category