BNP কি সত্যিই ভারত-বিরোধী? খালেদা জিয়ার পুরনো বক্তব্য ঘিরে নতুন প্রশ্ন

BNP কি সত্যিই ভারত-বিরোধী? খালেদা জিয়ার পুরনো বক্তব্য ঘিরে নতুন প্রশ্ন

বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার প্রয়াণ নতুন করে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে এনে দিয়েছে তাঁর রাজনৈতিক দর্শন ও ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্ক নিয়ে অবস্থানকে। ৮০ বছর বয়সে ঢাকার এক হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন বাংলাদেশের প্রথম মহিলা প্রধানমন্ত্রী। এমন এক সময়ে তাঁর মৃত্যু হল, যখন বাংলাদেশে জাতীয় নির্বাচন ঘনিয়ে আসছে এবং রাজনৈতিক অস্থিরতা, সংখ্যালঘু নিরাপত্তা ও ভারত-বিরোধী আবহ নিয়ে আন্তর্জাতিক মহলেও উদ্বেগ বাড়ছে।

হাসিনা-পরবর্তী রাজনৈতিক সমীকরণে বিএনপি আবারও শক্তিশালী দল হিসেবে উঠে আসছে। ফলে স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠছে BNP কি আগের মতোই ভারত-বিরোধী অবস্থান বজায় রাখবে? এই প্রসঙ্গে অতীতে দেওয়া খালেদা জিয়ার একটি সাক্ষাৎকার নতুন করে গুরুত্ব পাচ্ছে।

একসময় বাংলাদেশের প্রথম আলো সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে খালেদা জিয়া স্পষ্টভাবে দাবি করেছিলেন, তিনি ভারত-বিরোধী নন। তাঁর বক্তব্য ছিল, ক্ষমতাসীন দল পরিকল্পিতভাবে তাঁকে ভারত ও হিন্দু-বিরোধী হিসেবে তুলে ধরার চেষ্টা করেছে। তিনি বলেছিলেন, বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামে ভারতের অবদানকে তাঁর দল স্বীকৃতি দেয় এবং দুই দেশের সম্পর্ক আরও মজবুত হওয়াই কাম্য। সেই সময় ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ঢাকা সফর নিয়েও ইতিবাচক মন্তব্য করেছিলেন তিনি।

তবে বাস্তব রাজনীতিতে খালেদা জিয়ার অবস্থান নিয়ে বিতর্ক ছিল প্রবল। বহু রাজনৈতিক বিশ্লেষকের মতে, ভারত-বিরোধী জাতীয়তাবাদ ছিল তাঁর রাজনীতির অন্যতম ভিত্তি। বিভিন্ন সময়ে ভারতের সঙ্গে দূরত্ব বজায় রাখার উদাহরণও সামনে এসেছে। প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়ের ঢাকা সফরের সময় সাক্ষাৎ না করা, ভারতের পরিবর্তে চিনের সঙ্গে সম্পর্ককে অগ্রাধিকার দেওয়া, এমনকি ১৯৭২ সালের ভারত-বাংলাদেশ মৈত্রী চুক্তিকে ‘দাসত্বের চুক্তি’ বলে আখ্যা দেওয়ার ঘটনাও আলোচিত।

তিস্তা জলবণ্টন, সীমান্ত সুরক্ষা ও অবৈধ অনুপ্রবেশ এই ইস্যুগুলিতে খালেদা জিয়ার সরকারের অবস্থান ছিল স্পষ্টতই সংঘাতমুখী। নয়াদিল্লির সঙ্গে কৌশলগত দূরত্ব বজায় রাখাই ছিল তাঁর কূটনীতির একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক।

এখন, খালেদা জিয়ার প্রয়াণের পর যখন বিএনপি আবার ক্ষমতার দোরগোড়ায়, তখন তাঁর রাজনৈতিক উত্তরাধিকার ও ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্কের ভবিষ্যৎ দিকনির্দেশ নিয়ে জল্পনা আরও তীব্র হচ্ছে। প্রশ্ন একটাই BNP কি অতীতের অবস্থানেই অনড় থাকবে, নাকি বদলাবে কূটনৈতিক সুর?

Category