যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে হিজাব সংক্রান্ত অভিযোগ ঘিরে বিতর্ক, পরীক্ষার সময় ছাত্রীকে প্রশ্ন করার অভিযোগে উত্তেজনা

যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে হিজাব সংক্রান্ত অভিযোগ ঘিরে বিতর্ক, পরীক্ষার সময় ছাত্রীকে প্রশ্ন করার অভিযোগে উত্তেজনা

যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে ফের বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে। পরীক্ষার সময় এক ছাত্রীকে হিজাব সরাতে বলা হয়েছে এমন অভিযোগ ঘিরে ক্যাম্পাসে উত্তেজনা ছড়িয়েছে। ছাত্রছাত্রীরা বিষয়টিকে ধর্মীয় সংবেদনশীলতা ও মুসলিম বিদ্বেষের সঙ্গে যুক্ত করে প্রতিবাদে সামিল হয়েছেন।

অভিযোগ অনুযায়ী, সম্প্রতি স্নাতক স্তরের তৃতীয় বর্ষের ইংরেজি পরীক্ষার সময় ঘটনাটি ঘটে। পরীক্ষার মাঝপথে এক ছাত্রীকে থামিয়ে ইনভিজিলেটর তাঁর হিজাব নিয়ে প্রশ্ন করেন এবং সেটি সরিয়ে দেখানোর অনুরোধ জানান বলে দাবি। বিষয়টি সামনে আসার পর সমাবর্তন অনুষ্ঠানের দিন ক্যাম্পাসে প্রতিবাদ শুরু হয়। কনভোকেশন ডে-তে কিছু ছাত্রছাত্রীকে ‘ইসলামোফোবিয়া চলবে না’ এই ধরনের বার্তাযুক্ত প্ল্যাকার্ড হাতে বিক্ষোভ করতেও দেখা যায়।

ওই পরীক্ষার্থী সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, তিনি শান্তিপূর্ণভাবে পরীক্ষা দিচ্ছিলেন। হঠাৎ করে ইনভিজিলেটর এসে তাঁর কাছে জানতে চান, গলায় কোনও ওয়্যারলেস ডিভাইস রয়েছে কি না এবং সেই কারণে হিজাব সরাতে বলেন। এই আচরণে তিনি মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েন বলে দাবি। তাঁর বক্তব্য, বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে নিজেকে সবসময় নিরাপদ মনে করলেও ওই দিনের অভিজ্ঞতায় সেই বিশ্বাসে আঘাত লেগেছে।

ছাত্রীর অভিযোগ আরও, তাঁকে ব্যক্তিগত ধর্মীয় পছন্দ নিয়েও প্রশ্ন করা হয় হিজাব পরার কারণ, ঋতুভেদে তা ব্যবহার করেন কি না, এমন প্রশ্নও করা হয়েছে বলে দাবি। ঘটনার সময় পরীক্ষার হলে উপস্থিত কয়েকজন পরীক্ষার্থী প্রতিবাদ জানান। পরে একজন মহিলা ইনভিজিলেটরের উপস্থিতিতে আলাদা ঘরে নিয়ে গিয়ে ছাত্রীটির পরিচয় যাচাই করা হয়। সেখানে তাঁর বিভাগের প্রধানও উপস্থিত ছিলেন। তবে কোনও নিষিদ্ধ সামগ্রী পাওয়া যায়নি।

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, বিষয়টি সামনে আসার পর ইংরেজি বিভাগে একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। কর্তৃপক্ষের বক্তব্য, এটি পরীক্ষার সুরক্ষা সংক্রান্ত নিয়ম মেনে করা একটি প্রক্রিয়া, যা ভুল বোঝাবুঝি থেকে বিতর্কের জন্ম দিয়েছে। কোনওভাবেই ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করার উদ্দেশ্য ছিল না বলে দাবি করা হয়েছে।

বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের তরফে আরও জানানো হয়েছে, পরীক্ষার সময় ইলেকট্রনিক ডিভাইস ব্যবহার রুখতে নিয়মিত তল্লাশি চালানো হয়। সেই প্রেক্ষিতেই এই ঘটনা ঘটে থাকতে পারে। তবে ছাত্র প্রতিনিধিরা বিষয়টি নিয়ে লিখিত অভিযোগ জমা দিয়েছেন। খুব শীঘ্রই বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ও ছাত্র সংগঠনগুলির মধ্যে উচ্চপর্যায়ের আলোচনা হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

Category