'মেসির কাছে ক্ষমা চাইছি…’ যুবভারতী কাণ্ডে মুখ্যমন্ত্রীর প্রথম প্রতিক্রিয়া

যুবভারতী কাণ্ডে মুখ্যমন্ত্রীর প্রথম প্রতিক্রিয়া

যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনে লিওনেল মেসির অনুষ্ঠান ঘিরে সৃষ্ট বিশৃঙ্খলা নিয়ে প্রকাশ্যে ক্ষমা চাইলেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সোশ্যাল মিডিয়ায় দেওয়া এক বার্তায় তিনি জানান, ঘটনার জন্য তিনি গভীরভাবে দুঃখিত ও বিস্মিত।

মুখ্যমন্ত্রী লেখেন, সল্টলেক স্টেডিয়ামে যে অব্যবস্থা তৈরি হয়েছিল, তা অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক। প্রিয় ফুটবলার লিওনেল মেসিকে এক ঝলক দেখার আশায় হাজির হওয়া হাজার হাজার ক্রীড়াপ্রেমীর মতো তিনিও অনুষ্ঠানে যোগ দিতে স্টেডিয়ামের পথে ছিলেন। এই ঘটনার জন্য তিনি লিওনেল মেসি, ক্রীড়াপ্রেমী এবং তাঁর অসংখ্য ভক্তের কাছে আন্তরিক ক্ষমা প্রার্থনা করেন।

এই ঘটনার পর রাজ্য সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে মত রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক মহলের একাংশের। বিষয়টি যে মুখ্যমন্ত্রী নিজেও গুরুত্ব দিয়ে দেখছেন, তা স্পষ্ট তাঁর দ্রুত পদক্ষেপে। ঘটনার তদন্তের জন্য তিনি একটি উচ্চপর্যায়ের তদন্ত কমিটি গঠনের ঘোষণা করেছেন।

মুখ্যমন্ত্রীর জানানো অনুযায়ী, অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি আসীমকুমার রায়ের নেতৃত্বে এই তদন্ত কমিটি কাজ করবে। কমিটিতে সদস্য হিসেবে থাকবেন রাজ্যের মুখ্য সচিব, স্বরাষ্ট্র সচিব এবং পার্বত্য বিষয়ক দপ্তরের অতিরিক্ত মুখ্য সচিব। এই কমিটি পুরো ঘটনার বিস্তারিত তদন্ত করবে এবং ভবিষ্যতে এ ধরনের পরিস্থিতি এড়াতে প্রয়োজনীয় সুপারিশও করবে।

নিজের বার্তার শেষেও মুখ্যমন্ত্রী ফের একবার ক্রীড়াপ্রেমীদের কাছে ক্ষমা চেয়ে বলেন, তিনি আন্তরিকভাবে দুঃখ প্রকাশ করছেন।

উল্লেখ্য, মেসির অনুষ্ঠান দেখতে হাজার হাজার দর্শক বিপুল অর্থ ব্যয় করে টিকিট কিনেছিলেন। কেউ ৫ হাজার, কেউ আবার ১০ থেকে ১৫ হাজার টাকা পর্যন্ত খরচ করেন শুধুমাত্র ফুটবলের এই মহাতারকাকে এক ঝলক দেখার আশায়। কিন্তু মাঠে প্রবেশের পর থেকেই মেসিকে ঘিরে ঘন ভিড় তৈরি হওয়ায় সাধারণ দর্শকরা তাঁকে দেখতে পাননি।

মেসি স্টেডিয়াম ছাড়ার পর পরিস্থিতি দ্রুত উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। ক্ষুব্ধ দর্শকদের একাংশ বোতল ছোড়ে, স্টেডিয়ামের চেয়ার মাঠে ছুঁড়ে ফেলার অভিযোগ ওঠে। অনেকেই ফেন্সিং টপকে মাঠে ঢুকে পড়েন। শামিয়ানা বা অস্থায়ী কাঠামোয় আগুন লাগানোর চেষ্টার অভিযোগও সামনে আসে।

পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ ও র‌্যাফ মোতায়েন করা হয়। পুলিশের তরফে জানানো হয়েছে, বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে, যদিও মৃদু লাঠিচার্জের অভিযোগ উঠেছে।

দর্শকদের অভিযোগ, মাঠে উপস্থিত থাকা প্রভাবশালী ব্যক্তি ও অতিথিরাই মেসিকে ঘিরে রাখেন, যার জেরেই সাধারণ দর্শকরা তাঁকে দেখতে পাননি এবং সেখান থেকেই বিশৃঙ্খলার সূত্রপাত হয়। শেষ পর্যন্ত পুরো যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গন রণক্ষেত্রের চেহারা নেয়।

Category